ঢাকা ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আবু ওসমান চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:০২:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ১৬৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মুক্তিযুদ্ধের ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরীর অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।

অন্য এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে আবু ওসমান চৌধুরীর অসামান্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, ‘আবু ওসমান চৌধুরীর মৃত্যুতে দেশ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হারালো। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদানের কথা জাতি চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ রাখবে।’

শেখ হাসিনা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

এছাড়া জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ পৃথক শোক বার্তায় সমবেদনা জানিয়েছেন।

এর আগে আজ শনিবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মারা যান আবু ওসমান চৌধুরী। গত ৩০ আগস্ট থেকে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব সাংবাদিক হারুন হাবীব জানিয়েছেন, ‘গত ৩০ আগস্ট শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরীকে সিএমএইচ ভর্তি করা হয়। সেখানে তার করোনা শনাক্ত হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত শনিবার থেকে তিনি খাবার গ্রহণ করছিলেন না। ফলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই জরুরি ভিত্তিতে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে গেলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের এই লড়াকু সৈনিক।’

তিনি জানান, ‘আবু ওসমান চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।। স্মৃতিশক্তিও ক্রমে লোপ পাচ্ছিল তার। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকলেও করোনাকালের আগে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের বৈঠকে উপস্থিত থাকতেন। যদিও সেসময় তার কথা বলতে কষ্ট হতো।’

আবু ওসমান চৌধুরী সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সহ-সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।

১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মদনেরগাঁও গ্রামে জন্ম হয় এই মুক্তিযোদ্ধার। সপরিবারে তিনি রাজধানীর ধানমন্ডিতে থাকতেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে চৌধুরীকে বিজেএমসির চেয়ারম্যান করা হয়। পরে তাকে চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।

স্বাধীনতাযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০১৪ সালে তাকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করে সরকার। ১৯৬০ সালে কুমিল্লার মৌলভী পাড়ার মনসুর আহম্মেদের বড় মেয়ে নাজিয়া খানমের সঙ্গে আবু ওসমানের বিয়ে হয়। নাসিমা ওসমান ও ফাওজিয়া ওসমান তাদের দুই মেয়ে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আবু ওসমান চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক

আপডেট টাইম : ০৪:০২:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মুক্তিযুদ্ধের ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরীর অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।

অন্য এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে আবু ওসমান চৌধুরীর অসামান্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, ‘আবু ওসমান চৌধুরীর মৃত্যুতে দেশ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হারালো। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদানের কথা জাতি চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ রাখবে।’

শেখ হাসিনা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

এছাড়া জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ পৃথক শোক বার্তায় সমবেদনা জানিয়েছেন।

এর আগে আজ শনিবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মারা যান আবু ওসমান চৌধুরী। গত ৩০ আগস্ট থেকে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব সাংবাদিক হারুন হাবীব জানিয়েছেন, ‘গত ৩০ আগস্ট শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরীকে সিএমএইচ ভর্তি করা হয়। সেখানে তার করোনা শনাক্ত হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত শনিবার থেকে তিনি খাবার গ্রহণ করছিলেন না। ফলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই জরুরি ভিত্তিতে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে গেলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের এই লড়াকু সৈনিক।’

তিনি জানান, ‘আবু ওসমান চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।। স্মৃতিশক্তিও ক্রমে লোপ পাচ্ছিল তার। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকলেও করোনাকালের আগে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের বৈঠকে উপস্থিত থাকতেন। যদিও সেসময় তার কথা বলতে কষ্ট হতো।’

আবু ওসমান চৌধুরী সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সহ-সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।

১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মদনেরগাঁও গ্রামে জন্ম হয় এই মুক্তিযোদ্ধার। সপরিবারে তিনি রাজধানীর ধানমন্ডিতে থাকতেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে চৌধুরীকে বিজেএমসির চেয়ারম্যান করা হয়। পরে তাকে চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।

স্বাধীনতাযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০১৪ সালে তাকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করে সরকার। ১৯৬০ সালে কুমিল্লার মৌলভী পাড়ার মনসুর আহম্মেদের বড় মেয়ে নাজিয়া খানমের সঙ্গে আবু ওসমানের বিয়ে হয়। নাসিমা ওসমান ও ফাওজিয়া ওসমান তাদের দুই মেয়ে।